শিলে বাটা মসলা আর মিক্সিতে বানানো মসলার মধ্যে রয়েছে কিছু বিশেষ পার্থক্য, জেনে নিন

নিজস্ব প্রতিবেদন: পূর্ববর্তী সময়ে রান্না করার জন্য আমাদের মা ঠাকুমারা কিন্তু সর্বদাই শিলনোড়ার ব্যবহার করে থাকতেন। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে উন্নতির জোয়ারে এই শিলনোরা কিন্তু একেবারে হারিয়ে গিয়েছে বলা যায়। কর্মব্যস্ত জীবনে এখন বেশিরভাগ মানুষই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন যন্ত্রের উপরে।সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় রান্নাঘরে শিল-নোড়ার বদলে জায়গা করে নিয়েছে মিক্সি মেশিন। মিক্সারে দুই মিনিটের মধ্যে সবকিছু সহজেই তৈরি হয়ে যায়। তবে শিলনোড়াই বাটা যে কোন মসলা বা চাটনির সাথে মিক্সিতে তৈরি জিনিসের কিন্তু প্রচুর পার্থক্য রয়েছে। শুধুমাত্র স্বাদ নয় পুষ্টি উপাদানের অনেক তফাৎ এখানে আপনারা পাবেন। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা সেই বিষয়টা নিয়েই আপনাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।

১) শিলে আর মিক্সিতে বাটা মসলার স্বাদে ভিন্নতা:

আমরা প্রতিবেদনের শুরুতেই এই ব্যাপারটি জানিয়েছি, শিলনোরাই বাটা মসলা আর মিক্সার গ্রাইন্ডারে বাটা মসলার মধ্যে ব্যাপক পরিমাণে স্বাদের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।শিল-পাটায় গ্রাউন্ড মসলার বিশেষত্ব হল এর দীর্ঘস্থায়ী স্বাদ। সবজিতে মসলা যোগ করলে খাবারের স্বাদ বের হয়ে আসে। মিক্সারের ব্লেডের কারণে মসলার স্বাদ বদলে যায়। লক্ষ্য করে দেখবেন যখন গ্রাইন্ডারে পুদিনা পাতা অথবা রসুনের চাটনি তৈরি করা হয় সেগুলোর স্বাদ কিন্তু অনেকটাই তেতো ধরনের হয়ে যায়। আবার গরম মসলার ক্ষেত্রেও কিন্তু আপনারা এই বিষয়টা ধরতে পারবেন।স্বাদে গন্ধে সবসময় শিল পাটায় বাটা মসলা এগিয়ে থাকবে মিক্সির থেকে।

২)মসলার তাপ কম বেশিতে আছে বিশাল পার্থক্য:

যারা আগে শিলনোড়ায় মসলা বেঁটেছেন এবং পরবর্তীতে মিক্সার গ্রাইন্ডার ব্যবহার করেছেন তারা খুব সহজেই কিন্তু এই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন।শিল পাটায় বাটা মসলা উৎপন্ন তাপকে সরিয়ে দেয়। বিশেষ করে যেসব মসলা গরম প্রকৃতির হয়। মিক্সারে তা যদি পিষে নেন তাহলে তা মসলার তাপ অনেকটা বৃদ্ধি করে দেয়। মিক্সারে মসলা বাটার পর ঢাকনা খুললে ধোঁয়া বেরতে দেখবেন।শিল পাটায় মসলা বেটে তা দিয়ে রান্না করলে শরীর বা পেট কোনটাই গরম হয় না। আগেকার দিনে কিন্তু তাই যান্ত্রিক সুবিধায় থাকলেও মানুষ সব সময় চেষ্টা করতেন সময় বের করে শিলনোড়ায় মসলা বেটে নেওয়ার।

৩)শরীরের কসরত:

হয়তো এই তৃতীয় কথাটি শুনে আপনারা বেশ অবাক হয়ে পড়েছেন। তবে একথা সত্যি যে মসলা বাটার সময় খুব সুন্দর ভাবে শরীরের কসরত হতে পারে।এতে হাতের ভালো ব্যায়াম হয়। সেই সঙ্গে মসলা বা চাটনি বাটার সময় যে ভঙ্গিতে বসেন তাতে পেটে চাপ পড়ে এবং পেট ভিতরের দিকে চাপ পড়ে। ফলে পেটের একধরণের এক্সাসাইজ হয়ে যায় কাজ করতে করতে। মসলা নিয়মিত শিলে বাটলে পেট ও উরুর চারপাশে চর্বি জমে না। অনেকেই হয়তো এই ব্যাপারটা জানেন না তবে আশা করছি, এই প্রতিবেদনটা পড়ার পর আর কোন সন্দেহের অবকাশ থাকবে না।

প্রতিবেদনের একদম শেষে বলবো এবার থেকে চেষ্টা করবেন হাতে একটু সময় থাকলেই কিন্তু শিলনোড়ায় মসলা বেটে নেওয়ার। এতে যেমন খাবারের স্বাদ আপনারা উপভোগ করতে পারবেন ঠিক তেমনভাবেই কিন্তু উপরিউক্ত বেশ কিছু সুবিধা আপনাদের হয়ে যাবে। তাহলে চলুন এবার আজকের প্রতিবেদনটি শেষ করা যাক। এই ধরনের আরও টিপস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী থাকলে আমাদের অন্যান্য প্রতিবেদন গুলোর উপর নজর রাখতে পারেন।

Leave a Comment