







নিজস্ব প্রতিবেদন: গরম গরম ভাতের সাথে মসুর ডাল খেতে দারুন লাগে। তবে একঘেয়ে ভাবে প্রত্যেকবার ফোড়ন দিয়ে রান্না করলে কিন্তু এর স্বাদ মানুষের অপছন্দ হয়ে যাবে। তাই যাতে খাবারে অনীহা না আসে সেই কারণে আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে পাঁচ ধরনের মসুর ডালের ফোড়ন আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব। প্রত্যেকবার কিন্তু তাহলে এবার থেকে ডাল রান্না করলে আপনারা ভিন্ন ধরনের দারুন স্বাদ পাবেন আর খেতেও ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
১. ডালে হিং এবং জিরা ফোঁড়নঃ
মসুর ডালে প্রথমেই আপনারা যে ফোড়ন দিতে পারেন সেটা হল হিং এবং জিরে ফোড়ন। এই পদ্ধতিতে প্রথমেই আপনাকে ভালো করে ডাল সেদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর একটি আলাদা কড়াইতে তেল গরম করে তাতে হিং, এক চা চামচ জিরা, আধা চা চামচ লাল লঙ্কার গুঁড়ো, দুটো শুকনো লঙ্কা এবং সামান্য কোড়ানো আদা দিয়ে হালকা সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভালো করে ভেজে নিন।




এরপর এই ভাজা মসলা সেদ্ধ করা মসুর ডালের সঙ্গে আপনাকে মিশিয়ে নিতে হবে। ফোড়ণের সাথে ভালো করে ডাল মিশিয়ে নেওয়ার পর যতক্ষণ না রান্না হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ অবধি অপেক্ষা করুন। সবশেষে রান্না হয়ে গেলে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করে দিন মসুর ডালের এই রেসিপি। খাবারের স্বাদ কতটা মজাদার হবে সেটা আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন।
২. মুসুর ডালে কালোজিরা ও মৌরি ফোঁড়নঃ
মসুর ডালে ফোণ হিসেবে কিন্তু আপনারা কালোজিরে আর মৌরি ও সহজেই ব্যবহার করতে পারেন।সরষের তেলে কালোজিরা ও মৌরি যোগ করলে স্বাদ বাড়ে। এই ফোঁড়ন তৈরি করতে ১/২ চামচ কালোজিরা, ১/২ চামচ মৌরি, লাল শুকনো লঙ্কা দুটো এবং কাটা টমেটো তেলে দিয়ে রান্না করুন। তারপর ভালো করে ডালের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। ব্যাস এরপর মসুর ডাল রান্না হয়ে গেলে গরম ভাতের সাথে সামান্য পোস্তর তরকারি অথবা যে কোন ভাজার সাহায্যে পরিবেশন করুন। খেতে কেমন লাগলো অবশ্যই কিন্তু কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না।




৩. সম্বর ডাল ফোঁড়নঃ
একঘেয়ে ফোড়ন দিয়ে ডাল রান্না করতে গিয়ে যদি আপনারা বিরক্ত হয়ে যান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বিকল্প হিসেবে সম্বর ডাল ফোড়ন ট্রাই করতে পারেন। সাধারণত দক্ষিণ ভারতীয় ডালে কিন্তু এটা খুবই প্রচলিত।এটি তৈরি করতে তেলে কালো সরষের দানা, কারিপাতা, সাম্বার মসলা, লাল লঙ্কা ও তেঁতুলের রস দিয়ে ফোড়ন দিতে হবে। তারপর সেটাকে মসুর ডালের সাথে মিশিয়ে রান্না করে নিলেই কিন্তু তৈরি হয়ে যাবে অসাধারণ রেসিপি। ইউনিক এই ফোড়নের পদ্ধতিতে তৈরি ডাল খেতে আপনাদের কেমন লাগলো সেটা জানার কিন্তু আগ্রহ রইলো।
৪. ধাবা স্টাইল ফোঁড়ন বা তাড়কাঃ
যারা একটু চটপটা খাওয়া পছন্দ করেন তারা কিন্তু অবশ্যই এই ফোড়ন বাড়িতে ট্রাই করে দেখতে পারেন। এই পদ্ধতিতে আপনাদের টেম্পারিং দিতে গেলে তেলে এক চিমটি হিং এবং ১ চা চামচ জিরা দিয়ে যতক্ষণ না সোনালী হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ অবধি অপেক্ষা করতে হবে। তারপর একসঙ্গে পেঁয়াজ রসুন আর আদা কুচি মিশিয়ে ভেজে ফেলুন।তারপর নুন, হলুদ, লাল লঙ্কার গুঁড়ো, একটা শুকনো লঙ্কা চিঁরে এবং টমেটো মিশিয়ে নরম না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।




এরপর দেখবেন মসলা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করে দিয়েছে। সেই সময় মসুর ডাল মিশিয়ে ভালো করে রান্না করে নিন। তারপর কিছুটা মাখন ছড়িয়ে জিরা রাইসের সঙ্গে যদি মসুর ডালের এই রেসিপিটি পরিবেশন করেন তাহলে কিন্তু আর কোন কথাই হবে না। উৎসবের বিশেষ দিনগুলিতে আপনারা অবশ্যই মসুর ডাল রান্নার এই পদ্ধতি ট্রাই করে দেখতে পারেন।




৫. মুসুর ডালে আমিষ ফোঁড়নঃ
যেকোনো ডাল ততক্ষণ পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিরামিষ থাকে যতক্ষণ না এর মধ্যে পেঁয়াজ রসুন জাতীয় কিছু ব্যবহার করা হচ্ছে। সুতরাং নিরামিষ মসুর ডালে আপনারা খুব সহজেই পেঁয়াজ আর রসুন ফোড়ন দিয়ে কিন্তু এটাকে আমিষে রূপান্তরিত করে নিতে পারেন। তার জন্য আপনাকে প্রথমে এই নুন আর হলুদ ব্যবহার করে ডাল সেদ্ধ করে নিতে হবে।
এরপর কড়াইয়ে ২ চামচ সরষের তেল দিন। তেল গরম হলে তাতে শুকনো লঙ্কা একটা, ১/২ চামচ জিরা, ছোট একটা পেঁয়াজ কুচি, ১০-১২টা রসুন কুচি দিয়ে ভাজুন ২-৩ মিনিট। তারপর সেদ্ধ ডাল যোগ করে ৩-৪ মিনিট রান্না করুন। সবশেষে স্বাদমতো লবণ আর ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে গরম গরম ভাতের সাথে এই আমিষ পদ্ধতিতে তৈরি মসুর ডাল পরিবেশন করে দিন। সাথে পোস্তর বড়া বা যে কোন সুস্বাদু তরকারি খাবার হিসেবে দিতে পারেন।











